রবিবার, ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১১:২৪ অপরাহ্ন

দৃষ্টি দিন:
সম্মানিত পাঠক, আপনাদের স্বাগত জানাচ্ছি। প্রতিমুহূর্তের সংবাদ জানতে ভিজিট করুন -www.coxsbazarvoice.com, আর নতুন নতুন ভিডিও পেতে সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের ইউটিউব চ্যানেল Cox's Bazar Voice. ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে শেয়ার করুন এবং কমেন্ট করুন। ধন্যবাদ।

মহররমকে আল্লাহর মাস বলার কারণ

মাওলানা আবদুল জাব্বার:
পবিত্র মহররম মাস শুরু হয়েছে। সব প্রশংসা ওই আল্লাহর, যিনি হায়াত বৃদ্ধি করে নতুন একটি মাস ও বছরের সূচনায় আমাদের পৌঁছে দিয়েছেন। নতুন বছর, নতুন মাস, নতুন সপ্তাহ এবং প্রতিটি নতুন দিন ও রাত মানুষের জীবনের অংশ। আল্লাহতায়ালার স্বতন্ত্র নেয়ামত। এগুলোর জন্য স্বতন্ত্রভাবে শোকর আদায় তথা কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা দরকার। নতুন নতুন সংকল্প ও প্রত্যয়ে এগুলোকে বরণ করা দরকার। কোরআন মাজিদে ইরশাদ হয়েছে, ‘এবং তিনিই সেই সত্তা, যিনি রাত ও দিনকে পরস্পরের অনুগামী করে সৃষ্টি করেছেন। (কিন্তু এসব বিষয় উপকারে আসে কেবল) সেই ব্যক্তির জন্য, যে উপদেশ গ্রহণের ইচ্ছা রাখে কিংবা কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করতে চায়।’ সুরা ফুরকান : ৬২

হাদিসে হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ইরশাদ করেছেন, ‘পবিত্রতা ইমানের অংশ। আলহামদুলিল্লাহ মিজানের পাল্লাকে ভরে দেয়। সুবহানাল্লাহ ও আলহামদুলিল্লাহ আসমান-জমিনের মধ্যস্থ শূন্যতাকে ভরে দেয়। নামাজ হলো নুর। সদকা হলো দলিল। সবর হচ্ছে আলো। কোরআন তোমার পক্ষে কিংবা বিপক্ষে প্রমাণ। প্রতিটি মানুষ সকাল যাপন করে; অতঃপর কেউ নিজেকে (আল্লাহর আনুগত্যে) নিয়োজিত করে জীবনকে রক্ষা করে। আর কেউ (নফস ও শয়তানের আনুগত্যে নিয়োজিত করে) নিজেকে ধ্বংস করে। সহিহ মুসলিম : ২২৩

সৌভাগ্যবান তো সেই ব্যক্তি যে প্রতিটি নতুন সময় ও সূচনায় নিজেকে এমন কাজে নিয়োজিত করে, যার মাধ্যমে আখেরাতে মুক্তি পাওয়া যায়। দুর্ভাগা সেই ব্যক্তি, যে নতুন সময় ও সূচনায় এমন কাজকর্মে লিপ্ত হয়, যা তার ধ্বংস টেনে আনে।

মহররম চান্দ্রবছরের প্রথম মাস। সম্মানিত চার মাসের তৃতীয় মাস। হাদিস শরিফে এ মাসের অনেক ফজিলতের কথা উল্লিখিত হয়েছে। এ মাসে বেশি বেশি নফল রোজা ও তওবা-ইস্তেগফারের প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে। ইরশাদ হয়েছে, ‘রমজানের পর সবচে উত্তম রোজা হলো আল্লাহর মাসের রোজা, যে মাসকে তোমরা মহররম নামে চেনো। আর ফরজ নামাজের পর সবচে উত্তম নামাজ হলো রাতের নামাজ। সহিহ মুসলিম : ১১৬৩

বর্ণিত হাদিসে লক্ষণীয় বিষয় হলো হজরত রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মহররম মাসকে বলছেন ‘শাহরুল্লাহ’ বা আল্লাহর মাস। জানা কথা, সব মাসই আল্লাহর মাস। এরপরও কোনো এক মাসকে আল্লাহর মাস বলার রহস্য কী? রহস্য হলো, এই মাসের বিশেষ কিছু বৈশিষ্ট্য আছে। সে জন্যই তাকে আল্লাহর মাস বলা হয়েছে। যেমন দুনিয়ার সব ঘরই আল্লাহর ঘর। কিন্তু সব ঘরকে বায়তুল্লাহ বলা হয় না।

মহররমের গুরুত্বপূর্ণ একটি ফজিলত হলো এর সঙ্গে তওবা কবুলের ইতিহাস যুক্ত। মুসনাদে আহমাদ ও জামে তিরমিজিতে বর্ণিত এক হাদিসে আছে, এক ব্যক্তি নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের নিকট এসে জিজ্ঞেস করল, আল্লাহর রাসুল! রমজানের পর আপনি আমাকে কোন মাসে রোজা রাখার নির্দেশ দেন? উত্তরে নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন, তুমি যদি রমজানের পর আরও কোনো মাসে রোজা রাখতে চাও তাহলে মহাররমে রোজা রাখো। কেননা সেটি আল্লাহর মাস। সেই মাসে এমন একটি দিন রয়েছে, যেদিন আল্লাহতায়ালা অনেকের তওবা কবুল করেছেন। ভবিষ্যতেও সেদিন আরও মানুষের তওবা কবুল করবেন। জামে তিরমিজি : ৭৫১

এই হাদিসে যে দিনের দিকে ইশারা করা হয়েছে খুব সম্ভব সেটি আশুরার দিন। তবে বান্দার উচিত, বছরের সব দিনেই তওবা-ইস্তেগফারের প্রতি গুরুত্ব দেওয়া। বিশেষ করে এই মাসের প্রতিটি দিনেই তওবা-ইস্তেগফারের প্রতি বেশি গুরুত্ব দেওয়া। আর আশুরার দিন অনেক বেশি ইস্তেগফার করবে।

ইসতিগফারের জন্য সবচে’ উত্তম হলো- কোরআন ও হাদিসে বর্ণিত ইস্তেগফার বিষয়ক দোয়াগুলো বুঝে বুঝে মুখস্থ করবে। সেই দোয়াগুলোর মাধ্যমে রাব্বে করিমের দরবারে ক্ষমা প্রার্থনা করবে। তবে নিজের ভাষায় নিজের মতো করে ইস্তেগফার করলেও ঠিক আছে। কারণ আল্লাহতায়ালা সব ভাষারই স্রষ্টা। তিনি সবার কথা বুঝেন। সবার আরজি কবুল করেন।

ভয়েস/আআ

Please Share This Post in Your Social Media

© All rights reserved © 2023
Developed by : JM IT SOLUTION